Monday, March 12, 2012

বর্ণিল আনন্দে অনুষ্ঠিত হল বন্ধুঘরের ১ম মেধা উৎসব

ডেস্ক প্রতিবেদন : সকাল ৮ বাজতেই মুখরিত হয়ে ওঠে স্কুল মাঠ। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা জড়ো হতে থাকে মাইকের কাছে। অনেকের ব্যস্ত ফোন, ভাই! প্রতিযোগিতা একটু দেরিতে শুরু করেন, আমরা রাস্তায় আছি। এভাবেই বিপুল উৎসাহ নিয়ে প্রায় ৭০০ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল বন্ধুঘর পাঠাগার আয়োজিত মেধা উৎসবে। প্রতিযোগীদের অনেকের বয়স চারের নিচে। তারা এসেছেন বাবা মায়ের হাত ধরে। সবার দৃষ্টিতেই অন্যরকম আকাক্সা।
মহান স্বাধীনতার মাস উপলক্ষে এমন উচ্ছ্বল আনন্দে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল মেধা উৎসব। আয়োজন করেছিল শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানার লয়খা গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ‘বন্ধুঘর পাঠাগার’। ঝিনাইগাতী দেশের সীমান্তবর্তি এলাকা। যে কারণে শিক্ষা-দীক্ষা ও উন্নয়নে অবহেলীত এ অঞ্চল। এখানকার ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহী করে এমন উদ্যোগ খুব কমই দেখা যায়। বন্ধুঘর পাঠাগারের মেধা উৎসব তাই ছড়িয়ে দিল অন্য জ্যোতি। যেখান থেকে ৭০ জন আগামীর ভবিষ্যৎ পেল তাদের মেধার সম্মাননা।


উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছিল নভেম্বরের শুরু থেকেই। শহর-গ্রাম সর্বত্র ছেয়ে উঠেছিল রঙিন পোষ্টারে। আর মাখানেক আগে ছাড়া হয় কুইজ ফরম। যা ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। পোস্টার দেখে অনেকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছেন আমরা অমুক স্কুল থেকে এতজন অংশ নিতে চাই। অনুষ্ঠানের দিন সকালে নাম নিবন্ধনের জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন ছেলে বুড়ো সবাই। এই কাজ আঞ্জাম দিতে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে শিমুল ও আরিফকে। সব মিলিয়ে নগর সুবিধা বঞ্চিত লয়খা’য় এভাবেই গড়ে ওঠেছিল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের এক দিনের মিলন মেলা।
সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ১ম থেকে ৩য় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিযোগিতা ‘যা খুশি বলতে পারো’ দিয়ে। ৩ থেকে ৫/৬ বছরের ছেলে মেয়েরাও যে স্টেজে ওঠে এতটা সাহসী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি করতে পারে, কৌতুক পরিবেশন করতে পারে সেটা দেখে কেবলই অবাক হয়েছে দর্শক। এরপর একে একে পরিবেশিত হয়েছে, হিফজুল কুরআন, হামদ নাত, বক্তৃতা, রচনা, আবৃত্তি, সুন্দর হাতের লেখাসহ মোট ৯টি প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ঝিনাইগাতীর বিভিন্ন স্কুল/মাদারাসার শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
পূর্ব গোপাল খিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ সহিদুর রহমান মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বাংলাদেশ এর সাবেক পরিচালক আলহাজ মোঃ আবদুল মোমেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদশা। প্রধান মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এসএমএ ওয়ারেজ নাঈম, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, শেরপুর জেলা প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক ও টেলিভিশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন শেরপুর এর সভাপতি, কাকন রেজা। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিকড় সাহিত্য মাহফিল মোমেনশাহী এর প্রতিষ্ঠাতা, লাবীব আবদুল্লাহ, হাতিবান্দা ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যার মোঃ নাসির উদ্দিন, তরুণ উদ্যোক্তা মোয়াজ আবরার,
ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাসান, বার্তা ২৪ ডটনেট এর সহ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, ইসলাম বার্তার সম্পাদক গাজী মুহাম্মদ সানাউল্লাহ, মাসিক পাথেয়'র সহকারী সম্পাদক মাসউদুল কাদির, সাপ্তাহিক শেরপুরের চীফ রিপোর্টার মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, পাক্ষিক শিকড় সম্পাদক আমীর ইবনে আহমদ, কবি ও গল্পকার সাইফ সিরাজ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, পাঠাগার সমাজ উন্নয়নে কাজ করে। ঝিনাইগাতী সীমান্তবর্তী অবহেলিত একটি এলাকা। শিক্ষা দিক্ষায় এখানকার মানুষ ততটা উন্নত নয়। এসব এলাকায় সামাজিক কাজকর্ম বাড়ানো দরকার। বন্ধুঘরের উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।
প্রধান মেহমান আলহাজ এস এম এ ওয়ারেজ নাঈম বলেন, শিক্ষা এবং সমাজ উন্নয়নে পাঠাগার ও সামাজিক সংগঠনগুলোর অবদান অনেক। আমরা শিক্ষা এবং উন্নয়নের ঝিনাইগাতীকে মডেল হিসাবে দাঁড় করাতে চাই। সে জন্য আমাদেরকে শিক্ষামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথি কাকন রেজা বলেন, লয়খার মতো একটা প্রত্যন্ত গ্রামে এ উদ্যোগ নি:সন্দেহে একটি নি:স্বার্থ ও কল্যাণকামী উদ্যোগ। আমরা সর্বত্র এসব কাজের বিস্তৃতি কামনা করি।


                                      আলহাজ মো. আবদুল মোমেন

(বা দিক থেকে) প্রধান আলোচক লাবীব আবদুল্লাহ, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা, শেরপুর প্রেসক্বাবের সা. সম্পাদক কাকন রেজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম এ ওয়ারেজ নাঈম...

1 comment:

  1. তোমাদের উদ্দ্যেগকে সাধুবাদ জানাই।

    ReplyDelete

ভালো লাগা রইল... অনেক ধন্যবাদ