কার্যক্রম

 বন্ধুঘর পাঠাগার বইয়ের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে আলোকিত করতে চায়। সেই সঙ্গে গ্রামের তরুণ-যুবক এবং অভিভাবকদের সাথে নিয়ে সমাজসেবার কাজ নিয়জিত হতে চায়। যে সব কাজের মাধ্যমে বদলে যায় পরিবার ও সমাজ। মানুষ আলো পায়। দূর হয় অন্ধকার।

আমাদের কর্মসূচী


বই পড়া কর্মসূচী : বই পড়ে শুধু সময় কাটানো আর কিছু তথ্য জানা যায় না। বই পড়ে নিজের জীবনও গড়ে নেয়া যায়। সেজন্য আমাদের প্রধান কর্মসূচী থাকবে বই পড়া। গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, ধর্মীয় কিংবা ছড়া-কবিতার বই তো থাকবেই। পাশাপাশি যে সব বই পড়ে সত্যিকার অর্থেই নিজের জীবন গড়ে নেয়া যায় এমন বইও বন্ধুঘর পাঠাগারে থাকবে। প্রতি বছর পাঠাগারের সদস্যরা নানান জায়গা থেকে এসব বই সংগ্রহ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই পড়ুয়া পাঠকের হাতে বই তুলে দেবে। পড়া শেষে আগের বইটি নিয়ে এসে দিয়ে আসবে নতুন বই। যারা আগে কখনো বই পড়তে চাইত না, অন্যদের দেখাদেখি তারাও যাতে বই পড়তে আগ্রহী হয় সে ব্যাপারেও নানান পদপে নেবে পাঠাগার। শুধু লয়খা (ঝিনাইগাতী শেরপুর) গ্রামের ছাত্র-শিকরাই নয়, পাশের গ্রামের স্কুল/মাদরাসার ছাত্র-শিকরাও যাতে পাঠাগার থেকে তাদের চাহিদা মতো বই নিয়ে পড়তে পারেন, অনেক কিছু জানতে পারেন সেদিকে আমাদের নজর থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা, সৃষ্টিশীল সমাজ গঠনের ল্েয ‘বন্ধুঘর পাঠাগার’ বই পড়া ও সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে মানুষকে বহুমুখী তথ্য জানার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ : কম্পিউটার এখন নিত্য প্রয়োজনীয় একটি বস্তুতে পরিণত হয়েছে। লেখা-পাড়াসহ কাজ কর্মে এমন কি যেকোনো ধরনের চাকরির ইন্টারভিউতে এখন কম্পিউটার জানাশোনা লোককে প্রাধান্য দেয়া হয়। এছাড়া আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে গেলে আইটি বিষয়ে জানতে হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই বন্ধুঘর পাঠাগার আগামীতে কম্পিউটার ও আইটি প্রশিণের সুযোগ রাখবে।

মেধাবী ও গরিব শিক্ষার্থী সহযোগিতা কর্মসূচী : গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বিভিন্ন এলাকার উচ্চবিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজে পড়ুয়া মেধাবী গরিব শিার্থীদের উৎসাহ দিতে প্রতি শ্রেণীতে ভালো ফলাফল করার জন্য সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি তাদের পোশাক ও শিা উপকরণও কিনে দেয়ার মতো কর্মসূচী হাতে নেয়া হবে।

সুস্থসংস্কৃতি ও মেধা বিকাশে শিশু উৎসব : গ্রামের মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীরা উপযুক্ত পরিবেশ ও সুস্থ বিনোদনের অভাবে তাদের মেধা বিকাশ করতে পারে না। কিছু ছেলে পেলে স্কুল/মাদরাসায় গেলেও অধিকাংশকে দেখা যায় সারাদিন খেলাধুলা আর টিভি সিনেমাতে ডুবে থাকতে। এদের বাবা-মাও নিরক্ষর হওয়ার কারণে তাদের কিছু বলেন না। বন্ধুঘর পাঠাগার এসব ছেলে/মেয়েদের সুস্থ বিনোদন, পড়ার উপকরণসহ তাদেরকে উৎসাহ দিতে প্রতিমাসে মেধা উৎসবের আয়োজন করবে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচী : পাঠাগারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী-পুরুষ সবাইকে স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নানান রকম সচেতনতার কাজ করে যাবে। স্থানীয় হাসপাতালের সহযোগিতায় গ্রামের প্রতিটি মানুষের রক্তের গ্রুপ জানা, রক্তদান কর্মসূচীর মতো কাজও করবে। জনসংখ্যা এবং স্বাস্থ্যের নানান দিক নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের বই, ম্যাগাজিন, লিফলেট এবং পোস্টার সংগ্রহ করে সাধারণ মানুষকে জানানোর চেষ্টা করবে। এ সব বিষয়ে যখন যেটা পাওয়া যাবে আমরা সেটাও সংগ্রহ করার চেষ্টা করবো।

পরিবেশ উন্নয়ন : দেশের প্রতিটি এলাকার যুবসমাজের মধ্যে এখন এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। ভালো কাজ থেকে তারা দূরে সরে গিয়ে সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে। ‘বন্ধুঘর পাঠাগার’ এলাকার এ ধরনের তরুণ-যুবকদের বুঝিয়ে আলোর পথে আনার চেষ্টা করবে। এদের সবাই যাতে ধূমপান, গাঁজা সেবন, মদপান, ইভটিজিংয়ের মতো কাজ ছেড়ে নিয়মিত নামাজ, সেবামূলক কাজসহ বই পড়ে নিজের জীবন গড়ে নিতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হবে। পাঠাগারের পরামর্শ নিয়ে এরা যাতে আয়বর্ধক কাজে নিয়োজিত হতে পারে, নিজের বাড়ির পাশে পড়ে থাকা জমিতে সবজি চাষ করে, ফল বা কাঠের গাছ রোপণ করে সাবলম্বি হতে পারে সে চেষ্টাও করে যাবে।

চাষিদের আধুনিক কৃষি তথ্য জানানো : সৃজনশীল মৌলিক বইয়ের পাশাপাশি আমাদের পাঠাগার কৃষিকাজ, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ, গবাদিপশু পালন, বনায়ন প্রভৃতি বিষয়ে নানান রকম বই, লিফলেট, পোস্টার সংগ্রহ করে কৃষিকাজে জড়িত গ্রামের মানুষকে চাষের আধুনিক তথ্য ও কৌশল জানানোর চেষ্টা করবে। দরিদ্র কিন্তু কৃষিতে নতুন কিছু করার আগ্রহ আছে এমন নানান বয়সের মানুষকে জেলা এবং উপজেলা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অফিসের সহযোগিতায় প্রশিণ দেয়ার পর সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার কাজও করে যাবে।

সুদমুক্ত ঋণ প্রদান : গ্রামের মানুষের অধিকাংশ সময়ই আর্থিক সংকটে থাকেন। উপায়হীন অবস্থায় টাকা ধার করেন মানুষের কাছে। এই সুযোগে এক দল অসাধু ব্যক্তি সুদের বিনিময়ে ঋণ দেয় এক পর্যায়ে সর্বত্র হাতিয়ে নেন। যার ফলে নি:স্ব হয়ে পড়েন ঋণগ্রহিতা। ‘বন্ধুঘর পাঠাগার’ চেষ্টা করবে এমন অসহায় ব্যক্তিদের সুদ ও শর্তমুক্ত ঋণ দিতে। যাকে হাদিসের ভাষায় বলা হয়েছে কর্যে হাসানা।

গরিব-দু:খিদের মাঝে কাপড়/খাদ্য বিতরণ : বাংলাদেশ বন্যাদুর্যোগের দেশ। আবার দরিদ্রের সংখ্যা দেশে বেশি হওয়া ঈদের দিনেও অনেক মানুষকে না খেয়ে থাকতে হয়। পুরোন কাপড়ে ঈদ করতে হয়। বন্ধুঘর পাঠাগার এমন অসহায়দের পাশে থেকে তাদেরকে সামান্য হলেও সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সময় কাপড় বিতরণ প্রজেক্ট নিবে বন্ধুঘর।

সংকলন প্রকাশ : পাঠাগারের কার্যক্রম সারাদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরাসহ এলাকার তরুণদের সাহিত্য চর্চা জন্য ‘বন্ধুঘর পাঠাগার’ একটি দ্বিমাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করবে। এতে পাঠাগারের নানান রকম কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি শেরপুরের খ্যাতিমান রাজনীতিক, লেখক সাহিত্যিক-সাংবাদিক ও গুণীজনদের পরিচয় তুলে ধরবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে অন্যায়ের প্রতিবাদসহ সৎকাজের আদেশ ও উন্নয়নমূলক কাজে মানুষকে উৎসাহ দেবে।

আহবান : আমাদের পাঠাগার-এর কার্যক্রম আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানের কাছে যদি সমাজ বদলের জন্য সামান্যতম ইতিবাচক কাজ বলে মনে হয় তাহলে আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন, আমাদের প্রতি হাত বাড়ান। আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানের সহৃদয় সহযোগিতা পেলে আমাদের পাঠাগার-এর কাজ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

No comments:

Post a Comment

ভালো লাগা রইল... অনেক ধন্যবাদ