সেই ছোটবেলা। নিজের একটা কবিতার কম্পোজ কপি হাতে পাওয়ার পর অসম্ভব ভালো লেগেছিল। মনকে সান্ত্বানা দিয়েছি। এই তো আমার লেখা যন্ত্রের অরে। ছাপা’র কালিতে। কতবার দেখেছি। কতবার পড়েছি।
এখন...! লেখালেখিতে কবে যেন নিয়মিত হই। মনে নেই। তবে মনে আছে। পুরোনো সেই অনুভূতি নেই। তখনকার আবেগ আর মাথার কাছে অনুরণিত হয় না। লেখা ছাপার খবর পেয়ে যেই আমি মিরপুর থেকে পল্টন যাই। সেই আমি এখন পাশের বিল্ডিং মাড়াই না।
আসলেই কি অনূভূতিগুলো মরে গেছে! নাকি বিশালতা পেয়েছে!!
দুটোই/ অথবা না!
ধূর ছাই... একটা অটল সিদ্ধান্ত চাই। একটা দ্বিধাহীন সিদ্ধান্তে পৌছা চাই আমার।
অনুভূতিগুলো বিশালতা পেয়েছে হয়তো। আগে কলমে লিখতাম। এখন লিখি কিবোর্ডে। মাউস ক্লিক করলেই রাশি রাশি খাতা। বিনে পয়সা’র কালি। এক সময় কলম হাতে থাকত না বলে মনে মনে গালি দিতাম নিজেকে। এখন সেই অনুভূতি নেই, চাহিদা নেই।
আছে হয়তো!
সেই অনুভূতি, চাহিদা হয় তো এখন বিশালতা পেয়েছে। এখন কলম খাতা লাগে না। কন্ট্রোল অল্টার বি। ঝরঝরে লেখা হয়ে যায়।
অনুভূতি...
অনুভূতিরও কি জীবন রয়েছে? সময় সময় বাড়ে। সময় সময় কমে। গাছের যেমন একসময় জীবন ছিল না। জীবন আবিস্কার করলেন জগদিস চন্দ্র। অনুভূতিরও কি একসময় জীবন আবিস্কার করবেন কেউ! কোনো কালে। কোনো মহাজন! অনুভূতি তাহলে কি! অনুভূতি আসলে কি!!!
শেষ বিকেলে অপেক্ষায় নায়ক
নায়িকার মন খারাপ
ধলির বিলের ঠান্ডা জল পেরিয়ে সে আজ
দেখা দিবে না প্রেমিকের।
নায়ক হতাশায় বুক ভাঙে
দুর্বাঘাসে পড়ে থাকা কঞ্চিটা নিয়ে আকিবুকি করে
একটা দুর্ধর্ষ কবিতা লেখার চেষ্টা।
একটু পরেই প্রেমিকের অযাচিত অনুভূতি। ধূর ছাই। মানুষ কেন প্রেমে পড়ে। মানুষ কেন কবিতা লেখে!
প্রেমের অনুভূতিগুলো বিচিত্র। রিপন ভালোবাসে লাইলিকে। ভিতু ছেলে। সাহস নিয়ে বলতে পারে না। তোকে ভালোবাসি। পাড়াত বোনকে দিয়ে চিঠি দেয়। ব্যাস! জমতে থাকে প্রেম। ঘটনাটা বেশ আলোড়িত করে। আমিও পাড়ার একজনকে চয়েজ করি। ওর নাম...। পড়ে বলি। একখানা চিঠিও লিখি। সাথে একটা কবিতা। তবে সেটা আর তার হৃদয়ের চৌকাঠে পৌছেনি। কেন পৌছেনি? মাঝে মাঝে ভাবি। অসম্ভব ভীতু কি ছিলাম আমিও। বেশ ভয় পেতামকি ছোটবেলায়? মনে নেই। তবে কবিতাটা মাঝে মাঝে বের করে পড়ি। টাস্কি খেয়ে যাই। কিভাবে এটা লিখলাম। সাহিত্য বুঝতে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে হয়!
আমার প্রেমিক মনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এখনো তুলে রাখা লুকোয়িনির জন্য। কারো তরে ব্যায় করার সাহস হয়নি। করিনি। চিঠি, মাইলের পর মাইল হন্টন, দীর্ঘ অপেক্ষা, কারো বকুনি, ত্যাজ্যপুত্রের ভয়, এখন কিছুই নেই। মেনু-স্টার ০১৭১৭৮৩১৯৩৭ বৃদ্ধাঙ্গুলে সবুজ বাটন। কেল্লাফতে। ওপাশে সুরেলা কণ্ঠী। হ্যালো/হাই। কতদিন পর। ভুলেই তো গেছো। কিভাবে থাকো? নিষ্ঠুর তুমি। জানো না তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত অচল! কি পাষান!!!
=প্রেমিক গলা ঝাড়ে। হুমম। তুমিই বা কখন মনে কর। দেখিতো। সারাদিন ব্যস্ত থাকে ফোন।
=কি! কখন ব্যস্ত পেয়েছো! একদম বাজে বকবা না। ভালো হবে না বল্লাম।
=এই প্লিজ রাখো রাখো! স্যার ফোন দিয়েছে। রাগ করবে।
=কি ব্যাপার সামাদ! কল দিলেই বিজি পাই। কয়জনের সাথে প্রেম কর হে!
=না এইতো! স্যারের সাথে কথা বলছিলাম।
=কি! আমার সাথে চালাকি করো? বোকার হদ্দ না। সব বুঝি। জরিনা কে?
=টু..ট টু...ট, ওপাশে অদ্ভূত এক শব্দ।

No comments:
Post a Comment
ভালো লাগা রইল... অনেক ধন্যবাদ